গর্ভবতী গাভীর স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা
গাভী সাধারণত ২৮০ দিন বা ৯ মাস ১০ দিন গর্ভধারনের পর বাচ্চা প্রসব করে। গর্ভাবস্থায় গাভীর যত্ন যেমন: কৃমিমুক্তকরণ, সুষম খাদ্য সরবরাহ এবঙ ভিটামিন ও খনিজের প্রয়োজনীয় যোগানদান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গাভীর স্বাভাবিক প্রসব, স্বাস্থ্যবান বাছুর প্রদান, অধিক দুধ উৎপাদ এবং পরবর্তীতে সময়মত গর্ভধারণ গর্ভকালীন সময়ে গাভীর সুষম যত্নের উপর অনেকাঙশে নির্ভর করে।
নিম্নলিখিত উপায়ে গর্ভবতী গাভীর যত্ন নেয়া আবশ্যকঃ
১. গাভীর গর্ভধারণ কালের রেকর্ড যেমন: প্রজনন করানোর তারিখ, সম্ভাব্য বাচ্চা প্রসবের তাখি ও কৃমিমুক্তকরনের তারিখ লিপিবদ্ধ করতে হবে।
২. গর্ভধারণের ৭ মাস পর থেকে গাভীকে আলাদা ঘরে রাখতে হবে এবং অতিরিক্ত পরিচর্যা ও ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার পরিবেশন করতে হবে।
৩. গর্ভাবস্থায় ৭-৮ মাসেই দুধদোহন বন্ধ করতে হবে। দুধের প্রবাহ বন্ধ না হলে দানাদার খাদ্য কমিয়ে আঁশযুক্ত খাবার বাড়িয়ে দিয়ে দুধের প্রবাহ বন্ধ করা যায়।
৪. গাভীকে পর্যাপ্ত আলো বাতাসযুক্ত এবং সহজেই নাড়াচাড় করতে পারে এরকম ঘরে রাখতে হবে।
৫. গাভীর ঘর প্রতিদিন পরিস্কার করতে হবে এবং মাঝে মাঝে বীবাণুনাশক দিয়ে ধুয়ে দিতে হবে।
৬. গাভী যেন পড়ে গিয়ে আঘাত না পায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
৭. গর্ভবতী গাভীর ঘরের মেঝেতে শুকনো খড় সুন্দরভাবে বিছিয়ে দিতে হবে যাতে গাভী আরামে ঘুমাতে পারে।
৮. গাভীকে অতিরিক্ত ঠান্ডা ও গরম থেকে রক্ষা করতে হবে। অতিরিক্ত গরমের দিনে গাভীকে প্রতিদিন গোসল করাতে হবে।
৯. গাভীকে কোনভাবেই ভয় পাওয়ানো, দ্রুত তাড়ানো ও উত্তেজিত বা উত্যক্ত করা চলবে না।
১০. দুধ উৎপাদনকারী গর্ভবতী গাভীর দুধ উৎপাদনের শেষ ভাগে দেহের সঞ্চিত ক্যালসিয়াম, ভিটামিন ও খনিজ উপাদানসর্মহ দুধের মাধ্যমে প্রায় নি:শেষ হয়ে যায় এবং এ সময়ে গর্ভস্থ বাছুরের হাড় গঠন ও দৈহিক বৃদ্ধির জন্য অতিরিক্ত ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ ভিটামিন ও খনিজ সরবরাহ একান্ত প্রয়োজন।
১১. নিয়মিতভাবে একজন প্রাণি বিশেষজ্ঞের তত্ত্বাবধানে থাকতে হবে।
গাভীর প্রসবকালীন জটিলতা সমূহ দূরীকরণ
আমাদের দেশে গবাদিপশুর স্বাস্থ্যগত সমস্যা সমূহের মধ্যে প্রসবকালীন জটিলতা সমূহ অন্যতম। গাভীর প্রসব পরবর্তী সময়ে অনেক ক্ষেত্রে গর্ভফুল সমূমত পড়ে না, প্রসবোত্তর স্রাব দ্রুত অবমুক্ত হয় না এবং জরায়ু সঠিকভাবে পরিস্কার হয় না। ফলে জরায়ুতে জীবানুর সংক্রমণ ঘটে। এতে গাভীর জননচক্র নিয়মিত হয় না এবং গাভী সময়মত গরম হয় না। গাভীকে এসব জটিলতা সমূহ থেকে দূরে রাখতে প্রসবের পরপরই ইউটোক্লিন নির্ধারিত মাত্রায় খাওয়াতে হবে।
গাভীর অধিক দুধ উৎপাদন
অধিক দুধ পাওয়া প্রতিটি গাভীর মালিকের একান্ত কাম্য। গাভীর দুধ প্রদান গাভীর বংশগত বৈশিষ্ট্য, সুষম খাদ্য সরবরাহ, প্রসবকালীন স্বাস্ত্য পরিচর্যা, দুগ্ধদানকালীন যত্ন ইত্যাদির উপর নির্ভরশীল। সেক্ষেত্রে অধিক উৎপাদনশীল গাভী নির্বাচন বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস